অগ্রদৃষ্টি ডেস্ক: বাংলাদেশের শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের বিচার প্রক্রিয়াকে সমর্থন দিয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। শুধু নিজামী নন, অন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ার প্রতিও সমথর্ন জানায় দেশটি।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) রাত সোয়া ১১টার দিকে এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ এক প্রতিক্রিয়ায় বিষয়টি জানান।
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে এ বিষয়ে ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। ১৯৭১ সালে দেশটির স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়। চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়ায় ভারতের সমথর্ন রয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ মে) দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয়েছে সে সময়কার ‘মইত্যা রাজাকার’ নামে পরিচিত নিজামীকে। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী কিলিং স্কোয়াড আলবদর বাহিনীর সর্বোচ্চ নেতা ছিলেন এই নিজামী। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড, হত্যা-গণহত্যা ও ধর্ষণসহ সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব) দায়ে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়। অতঃপর তা কার্যকর করা হয়।
স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর এটি হচ্ছে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার পঞ্চম ফাঁসির রায় কার্যকর, যার মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা হলো জামায়াতের আমির তথা শীর্ষনেতার। এর আগে ফাঁসি কার্যকর হওয়া অন্য চার শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে তিনজনই জামায়াতের এবং অন্যজন ছিলেন বিএনপির সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতা।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নিজামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
এ রায়ের বিরুদ্ধে ২৩ নভেম্বর আপিল করেন নিজামী। ছয় হাজার ২শ’ ৫২ পৃষ্ঠার আপিলে মোট ১শ’ ৬৮টি কারণ দেখিয়ে ফাঁসির আদেশ বাতিল করে খালাস চেয়েছিলেন তিনি। তবে সর্বোচ্চ সাজা হওয়ায় আপিল করেননি রাষ্ট্রপক্ষ।
ওই আপিলের শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে গত ০৬ জানুয়ারি সংক্ষিপ্ত আকারে চূড়ান্ত রায় দেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। গত ১৫ মার্চ আপিল মামলাটির ১৫৩ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন সর্বোচ্চ আদালত।